Sunday, November 30, 2014

জেমস বন্ডের নানা কথা



১৯৫৩ বিশ্বের বই বাজারে এক যুগান্তকারী ঘটনা ঘটল ইয়ান ফ্লেমিংয়ের লেখা প্রথম জেমস বন্ড উপন্যাসক্যাসিনো রয়্যালপ্রকাশিত হলো তার পর তো বাকিটা ইতিহাস মনে রাখবেন, তখন ইন্টারনেট, টেলিভিশন এমনকি মোহাইল ফোনের কথা স্বপ্নেও ভাবা যায়নি ওই সময় একটা বইয়ের গোটা বিশ্বজুড়ে হইচই ফেলার ঘটনা নেহাতই কতিপয়


যাই হোক, সেই ১৯৫৩ থেকে আজও প্রায় ছয় দশক বাদেও জেমস বন্ড এখনো সমান আকর্ষনীয় এখনো সমান প্রাসঙ্গিক থেকে আশি, সকলের অন্যতম প্রিয় স্পাই তা সেই স্পাই সম্পর্কে এমন অজানা অনেক তথ্য রয়েছে, যা একান্ত বন্ড ভক্তরাও হয়তো জানেন না এমনই ৯টি অজানা তথ্যের হদিশ এখানে তুলে ধরা হলো

. একজন পাখি বিশেষজ্ঞের নামে জেমস বন্ডের নাম : দুনিয়ার সেরা স্পাইয়ের নাম এক পাখি বিশেষজ্ঞের নামেই রেখেছিলেন স্রষ্টা ইয়ান ফ্লেমিং একটি প্রবন্ধে তিনি লেখেন, “১৯৫৩ সালে যখন ক্যাসিনো রয়্যাল লিখি, তখন চেয়েছিলাম প্রোটাগনিস্টের নামটা বেশ ম্যাড়ম্যাড়ে হোক তাই ছোটবেলায় পড়া একটি বইবার্ডস এফ ওয়েস্ট ইন্ডিজ’-এর লেখকের নামেই নায়কের নাম রাখি জেমস বন্ড আসল বন্ড আবশ্য আমায় চিঠি লিখে নামটি ব্যবহার করার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন

. পিয়ের্স ব্রসন্যানদ্য ডেডলিয়েস্ট বন্ড’: শুধু লুকসের জন্যই নয়, প্রকৃত অর্থেই পিয়ের্স ব্রসন্যান সব থেকে খতরনাক বন্ডস্কাইফলসিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার আগে পর্যন্ত জেমস বন্ড সমস্ত সিনেমা মিলিয়ে ৩৫৪ জনের ভবলীলা সাঙ্গ করেন তার মধ্যে পিয়ের্স একাই ১৩৫ জনকে খুন করেন

. শন কোনারির পর থেকেই বন্ড স্কটিশ : সিনেমার পর্দায় অন্যতম সফল বন্ড শন কোনারিকে প্রথমে পছন্দ হয়নি ইয়ান ফ্লেমিংয়ের কিন্তুডক্টর নো’-তে তার অভিনয় দেখার পর মত বদলান তিনি শনের অভিনয়ে তিনি এতটাই প্রভাবিত হন যে, ‘ইউ অনলি লিভ টোয়াইসবইটিতে বন্ডকে স্কটিশ বানিয়ে দেন (কারণ, শন নিজেও স্কটিশ ছিলেন) আরো লেখেন, জেমসের বাড়ি স্কটল্যান্ডের গ্লেনকো শহরে পরবর্তীকালে শন কোনারিহাইল্যান্ডারছবির শ্যুট করতে যান গ্লেনকো শহরে

. থিম মিউজিকটি একটি ব্যর্থ গানের সুর থেকে নেয়া : জেমস বন্ড নামটির সঙ্গে তার ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকও একাত্ম হয়ে গেছে গিটারের ওই মূর্ছনা ছাড়া বন্ডেরবন্ডত্বইম্লান হয়ে যায় কিন্তু সেই সুরটি একটি চূড়ান্ত ব্যর্থ গানের সুর থেকে নেয়া হয়েছে গানটি কম্পোজ করেছিলেন মন্টি নরম্যান থিমটি প্রথম শোনা যায় ডক্টর নো ছবিতে

. -এর চরিত্রায়ণ : বন্ড সিরিজের যারা ভক্ত, তাদের কাছে এবং এই নাম দুটি ভীষণ পরিচিত এই -এর চরিত্রটি এক জন পিস্তল বিশেষজ্ঞকে মাথায় রেখে তৈরি করেছিলেন ফ্লেমিং তার আসল নাম জিওফ্রে বুথরয়েড তিনি ফ্লেমিং একটি চিঠি লিখে বন্ডের অস্ত্র নির্বাচন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন এমনকি এও বলেন, আসলে বন্ড যে পিস্তলগুলো সিনেমায় ব্যবহার করছেন তা সাধারণত, নারীরা ব্যবহার করেন তার পরইডক্টর নোসিনেমায় -এর আবির্ভাব ঘটে সেখানে চরিত্রটির নামও রাখা হয়েছিল জিওফ্রে বুথরয়েড

. চিত্রনাট্য লেখায় শিশু সাহিত্যিক : বন্ডের জীবনযাত্রার ধরন থেকে কেউ কী কখনো এটা আন্দাজ করতে পারেন, যে সিনেমার চিত্রনাট্য লেখার জন্য এক শিশু সাহিত্যিককে বাছাই করা হয়েছিল! ‘ইউ অনলি লিভ টোয়াইছবির চিত্রনাট্য লেখার জন্য প্রযোজক হ্যারি সালতম্যান এবং অ্যালবার্ট ব্রকোলি রোল্ড ডাল-এর দ্বারস্থ হন রোল্ড বিখ্যাত শিশু সাহিত্য যেমন চার্লি অ্যান্ড দ্য চকোলেট ফ্যাক্টরি, মাতিল্ডা, জেমস অ্যান্ড দ্য জায়ান্ট পিচ-এর মতো বইয়ের স্রষ্টা

. ক্লিন্ট ইস্টউডেরনা’ : শন কোনারি যখন বন্ডের চরিত্র থেকে অবসরের কথা ঘোষণা করেন, তখন নতুন বন্ড হিসাবে ক্লিন্ট ইস্টউডের কথা ভেবেছিল বন্ড ফ্র্যাঞ্চাইজি কিন্তু বন্ডকেমার্কিনিকরতে আগ্রহী ছিলেন না ক্লিন্ট একটি সাক্ষাতকারে ক্লিন্ট জানান, ‘তারা আমায় ভালো টাকার প্রস্তাব দেন কিন্তু আমার মনে হয়েছে, এতে বন্ডের মার্কিনিকরণ ঘটে যাবে তাই না করে দিই

. ফ্যানের তালিকায়হোমড়া-চোমড়া’ : জেমস বন্ডের ফ্যানদের তালিকায় অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিদের পাওয়া যাবে তার মধ্যে অন্যতম প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ. কেনেডি তার অন্যতম প্রিয় বইয়ের মধ্যে একটি ছিলফ্রম রাশিয়া উইথ লাভ জীবনের শেষ সফর ডালাসের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে তিনি এই ছবিটি দেখেই বের হন

. বন্ডের লুকসের পিছনে অবদান মার্কিন গায়কের : বন্ডকে দেখতে কেমন হবে, এটা নিয়ে বেশ ভাবনা চিন্তা করা হয় ইয়ান ফ্লেমিং বন্ডের বর্ননা করার সময় জেমসের চেহারার তুলনা মার্কিন গায়ক হোয়াজি কারমাইকেল-এর সঙ্গে করেন কারমাইকেলের ছবিটি দেখলে সে কথা বিশ্বাস করতে খুব একটা অসুবিধা হওয়ার কথা নয়

No comments:

Post a Comment

Thanks